॥ এবনে গোলাম সামাদ ॥
ভারতের আছে এক বিরাট স্থলবাহিনী। কিন্তু এই বাহিনীর সমরশক্তি কতটুকু সেটা নিয়ে ভারতে এখন সৃষ্টি হতে পারছে সংশয়। সমপ্রতি ভারতের সেনাপ্রধান বিজয় কুমার সিং (ভি কে সিং) বলেছেন, ভারতের প্রতিরাব্যবস্থা মোটেও আধুনিক নয়। ট্যাঙ্ক বাহিনীর যে গোলাবারুদ আছে তা যেকোনো বড় যুদ্ধে দু’দিনের মধ্যেই ফুরিয়ে যেতে পারে। এ রকম সীমিত সমরশক্তি নিয়ে কোনো সেনাবাহিনীর প েযুদ্ধ করা সম্ভব নয়। তিনি আরো বলেন, সেনাবাহিনীতে চলেছে নানা দুর্নীতি। ভি কে সিংকে সদ্য অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল, তেজেন্দার সিং ৬০০ টাটার ট্রাক কেনার জন্য ১৪ কোটি রুপি ঘুষ দিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু তিনি তাতরা ট্রাক কিনতে সম্মত হননি। কারণ তার মতে এই ট্রাক উচ্চ মানসম্পন্ন নয়। তিনি (ভি কে সিং) ভারতীয় সেনাবাহিনীর দুর্বলতা এবং দুর্নীতি নিয়ে সমপ্রতি একটি চিঠি লিখেছিলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংকে। ভি কে সিংকে খুব সহজ মানুষ বলে মনে হচ্ছে না। তার মধ্যেও রয়েছে যথেষ্ট জটিলতা। তিনি এ বছরের জানুয়ারি মাসের ১৫ তারিখে ভারতের সুপ্রিম কোর্টে তার বয়স সম্পর্কে একটি মামলা দায়ের করেন। তিনি বলেন, ‘তার জন্ম তারিখ ঠিক লেখা হয়নি। তার জন্ম ১৯৫০ সালে নয়। তার জন্ম হয়েছে ১৯৫১ সালে।’ তাই তাকে এ বছর মে মাসের ৩১ তারিখে অবসর গ্রহণে বাধ্য করা ঠিক হচ্ছে না। ॥
কিন্তু ভারতের সুপ্রিম কোর্ট বলেন, এফিডেভিট করে তিনি আইনত এখন আর বয়স কমাতে পারবেন না। তাকে তাই মে মাসের ৩১ তারিখে সেনাবাহিনী থেকে আইন মোতাবেক অবসর গ্রহণ করতে হবে। যেদিন ভারতের সুপ্রিম কোর্ট এই রায় দিচ্ছিলেন, সে সময় ভারতের সেনাবাহিনীর একটি বিশেষ সাঁজোয়া ইউনিট ও ছত্রী বাহিনীর একটি ইউনিট ভারতের প্রতিরা মন্ত্রণালয়কে অবহিত না করে যাত্রা শুরু করে রাজধানী দিলিস্ন অভিমুখে। যাকে অনেকে সন্দেহ করছেন সামরিক অভ্যুত্থানের একটি প্রচেষ্টা হিসেবে। যা সফল হতে পারেনি, ঠিক সময়ে প্রতিরা দফতর এর বিপ ব্েযবস্থা নিতে পারার ফলে। খবরটি প্রকাশিত হয়েছে ভারতের The Indian Express নামক দৈনিক পত্রিকার প্রথম পাতায় এপ্রিল মাসের ৪ তারিখে। এই খবর প্রকাশ হওয়ার পর সারা ভারতে তোলপাড় শুরু হয়েছে। মনে করা হচ্ছে, সেনাবাহিনী এবার না পারলেও আগামীতে পারে মতা দখল করতে। আশ্চর্যজনকভাবে, ভি কে সিংয়ের বিরুদ্ধে গ্রহণ করা হচ্ছে না কোনো ব্যবস্থা। অন্য যেকোনো দেশ হলে তাকে মতাচ্যুত হতে হতো। পেতে হতো সেনাবাহিনীর আইন ভঙ্গ করার জন্য বিধি মোতাবেক শাস্তি। কিন্তু তিনি এখন পর্যন্ত সেনাবাহিনীতে বহাল আছেন। কেবল তাই নয়, সাংবাদিকদের সাথে কথা বলছেন অনেকটা খোলামেলাভাবে। সেনাবাহিনীর অনেক স্পর্শকাতর ব্যাপার থাকছে তার এসব কথোপকথনের মধ্যে। বিখ্যাত মার্কিন সেনাপতি ম্যাক আর্থার ১৯৫২ সালে কোরিয়া যুদ্ধের সময় তখনকার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রুম্যানের সাথে ভিন্নমত পোষণ করেন।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট এ কারণে তাকে করেছিলেন পদচ্যুত। কিন্তু ভারতের প্রেসিডেন্ট ভি কে সিংকে পদচ্যুত করার কথা ভাবতে পারছেন না। মনে হচ্ছে ভি কে সিংয়ের বিরাট প্রভাব আছে সেনাবাহিনীর মধ্যে। ভারত সরকার তাই ভয় পাছে তার বিপ েকোনো ব্যবস্থা নিতে। তারা তাকে কেবল সরিয়ে দিতে চাচ্ছেন এ বছর মে মাসের ৩১ তারিখে। প্রস্তাব উঠেছে তার জায়গায় লেফটেন্যান্ট জেনারেল বিক্রম সিংকে ভারতের সেনাপ্রধান করতে। কিন্তু অনেকেই চাচ্ছেন না বিক্রম সিংকে সেনাপ্রধান করতে। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে দুর্নীতির। তার বিপ েআছেন ভারতের সাবেক নৌবাহিনীপ্রধান অ্যাডমিরাল এল এন রামদাস ও সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার এন গোপালস্বামী। তারা বিক্রম সিংয়ের নিয়োগ ঠেকাতে ভারতের সুপ্রিম কোর্টে মামলা করেছেন।
কঙ্গোয় জাতিসঙ্ঘ শান্তি মিশনে থাকার সময়ও তার বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি অভিযোগ ছিল বলে উলেস্নখ করা হয়। তিনি কঙ্গোতে যান জাতিসঙ্ঘের ভারতীয় শান্তিবাহিনীর সেনাপরিচালক হিসেবে। এসব থেকে মনে হচ্ছে, ভারতের সেনাবাহিনীর মধ্যে শুরম্ন হয়েছে মতার লড়াই। এর পরিণতি শেষ পর্যন্ত কী দাঁড়াবে তা বলা যাচ্ছে না। বর্তমান সেনাপ্রধান ভি কে সিং ভারতের প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংকে বলেছেন, ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা RAW (Research and Analysis Wing) একটি গোপন বাহিনী পরিচালনা করছে ভারতের অরুণাচল প্রদেশে। এই বাহিনীর ওপর ভারতের মূল সেনাবাহিনীর কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই। এর কাজ হলো তিব্বতে যারা চীনের বিরুদ্ধে গেরিলা যুদ্ধে নিযুক্ত তাদের সাহায্য করা। ভারতের সেনাবাহিনীতে তাই সৃষ্টি হচ্ছে পরিচালনা সঙ্কট। এদের কার্যকলাপে চীন-ভারত যুদ্ধ বাধলে ভারতীয় সৈন্য পড়তে পারে বিশেষ বিপাকে।
অরুণাচলে চীন এখনো ভারতের সার্বভৌমত্ব মানতে চাচ্ছে না। চীন বলছে, ভারতের অরুণাচলে প্রায় ৭৬ হাজার ৮০০ বর্গকিলোমিটার জায়গা ভারত দখল করে রেখেছে। ভারতের উচিত হবে আলোচনার মাধ্যমে এই জায়গা সম্পর্কে সমঝোতায় আসা। এই জায়গা নিয়ে এবং লাদাখের কিছু এলাকা নিয়ে ১৯৬২ সালের সেপ্টেম্বর মাসে বাধে চীন-ভারত যুদ্ধ; যা শেষ হয় ওই বছর নভেম্বর মাসে। এই যুদ্ধে ভারত হেরে যায় শোচনীয়ভাবে। কিন্তু ভারত-চীন এখন পর্যন্ত এই এলাকা কে কতটুকু নিয়ন্ত্রণ করবে তা নিয়ে কোনো সমঝোতায় আসতে পারেনি। এলাকাটি হয়ে আছে বিশেষভাবে বিরোধপূর্ণ। এই এলাকায় তাই ভারতের সেনাবাহিনীকে না জানিয়ে RAW যে তৎপরতা চালাচ্ছে, সেটা ভারতীয় সেনাবাহিনী সমর্থন করতে পারে না। ভি কে সিংয়ের এই বক্তব্য ভারতে সৃষ্টি করেছে বিশেষ চাঞ্চল্য।
মনে হচ্ছে ভারতের প্রতিরাব্যবস্থা হয়ে পড়তে চাচ্ছে ভেতর থেকেই দুর্বল। কারণ সেনাবাহিনীর অন্যতম প্রধান কথা হচ্ছে, শৃঙ্খলা। কোনো বিশৃঙ্খল সেনাবাহিনী কোনো যুদ্ধেই জয়ী হতে পারে না। ভারতের প্রতিরাব্যবস্থা ভারতের নাগরিকদের চিন্তার বিষয়। তবে বাংলাদেশের উচিত হবে এ েত্ের ভারতের ঘটনাপ্রবাহের ওপর সজাগ দৃষ্টি রাখা। বাংলাদেশের বর্তমান সরকার হয়ে উঠেছে খুবই ভারতপ্রেমী। ভারতের গোলযোগে অনেক সহজেই তাই জড়িয়ে পড়তে পারে বাংলাদেশ। বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্র ও ভারত একই অ েঅবস্থান করছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র একটি গণতন্ত্রী দেশ। কিন্তু সে ল্যাটিন আমেরিকার বিভিন্ন দেশকে আপন নিয়ন্ত্রণে রাখার ল্যে ওইসব দেশে সমর্থন দিয়ে এসেছে সেনাশাসকদের। ভারতের েত্ের যে ঠিক কী নীতি অনুসরণ করবে তা বলা যাচ্ছে না। সাবেক পাকিস্তানে ১৯৫৮ সালে জেনারেল আইয়ুব খানকে মতায় আসতে সহায়তা করেছিল যুক্তরাষ্ট্র তার আপন স্বার্থের কথা বিবেচনা করে। ভারতের কোনো সেনাপ্রধান আগামীতে একইভাবে, একই রকম কারণে পেতে পারেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষ বিবেচনা।
লেখক : প্রবীণ শিৰাবিদ, কলামিস্ট
ভারতের আছে এক বিরাট স্থলবাহিনী। কিন্তু এই বাহিনীর সমরশক্তি কতটুকু সেটা নিয়ে ভারতে এখন সৃষ্টি হতে পারছে সংশয়। সমপ্রতি ভারতের সেনাপ্রধান বিজয় কুমার সিং (ভি কে সিং) বলেছেন, ভারতের প্রতিরাব্যবস্থা মোটেও আধুনিক নয়। ট্যাঙ্ক বাহিনীর যে গোলাবারুদ আছে তা যেকোনো বড় যুদ্ধে দু’দিনের মধ্যেই ফুরিয়ে যেতে পারে। এ রকম সীমিত সমরশক্তি নিয়ে কোনো সেনাবাহিনীর প েযুদ্ধ করা সম্ভব নয়। তিনি আরো বলেন, সেনাবাহিনীতে চলেছে নানা দুর্নীতি। ভি কে সিংকে সদ্য অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল, তেজেন্দার সিং ৬০০ টাটার ট্রাক কেনার জন্য ১৪ কোটি রুপি ঘুষ দিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু তিনি তাতরা ট্রাক কিনতে সম্মত হননি। কারণ তার মতে এই ট্রাক উচ্চ মানসম্পন্ন নয়। তিনি (ভি কে সিং) ভারতীয় সেনাবাহিনীর দুর্বলতা এবং দুর্নীতি নিয়ে সমপ্রতি একটি চিঠি লিখেছিলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংকে। ভি কে সিংকে খুব সহজ মানুষ বলে মনে হচ্ছে না। তার মধ্যেও রয়েছে যথেষ্ট জটিলতা। তিনি এ বছরের জানুয়ারি মাসের ১৫ তারিখে ভারতের সুপ্রিম কোর্টে তার বয়স সম্পর্কে একটি মামলা দায়ের করেন। তিনি বলেন, ‘তার জন্ম তারিখ ঠিক লেখা হয়নি। তার জন্ম ১৯৫০ সালে নয়। তার জন্ম হয়েছে ১৯৫১ সালে।’ তাই তাকে এ বছর মে মাসের ৩১ তারিখে অবসর গ্রহণে বাধ্য করা ঠিক হচ্ছে না। ॥
কিন্তু ভারতের সুপ্রিম কোর্ট বলেন, এফিডেভিট করে তিনি আইনত এখন আর বয়স কমাতে পারবেন না। তাকে তাই মে মাসের ৩১ তারিখে সেনাবাহিনী থেকে আইন মোতাবেক অবসর গ্রহণ করতে হবে। যেদিন ভারতের সুপ্রিম কোর্ট এই রায় দিচ্ছিলেন, সে সময় ভারতের সেনাবাহিনীর একটি বিশেষ সাঁজোয়া ইউনিট ও ছত্রী বাহিনীর একটি ইউনিট ভারতের প্রতিরা মন্ত্রণালয়কে অবহিত না করে যাত্রা শুরু করে রাজধানী দিলিস্ন অভিমুখে। যাকে অনেকে সন্দেহ করছেন সামরিক অভ্যুত্থানের একটি প্রচেষ্টা হিসেবে। যা সফল হতে পারেনি, ঠিক সময়ে প্রতিরা দফতর এর বিপ ব্েযবস্থা নিতে পারার ফলে। খবরটি প্রকাশিত হয়েছে ভারতের The Indian Express নামক দৈনিক পত্রিকার প্রথম পাতায় এপ্রিল মাসের ৪ তারিখে। এই খবর প্রকাশ হওয়ার পর সারা ভারতে তোলপাড় শুরু হয়েছে। মনে করা হচ্ছে, সেনাবাহিনী এবার না পারলেও আগামীতে পারে মতা দখল করতে। আশ্চর্যজনকভাবে, ভি কে সিংয়ের বিরুদ্ধে গ্রহণ করা হচ্ছে না কোনো ব্যবস্থা। অন্য যেকোনো দেশ হলে তাকে মতাচ্যুত হতে হতো। পেতে হতো সেনাবাহিনীর আইন ভঙ্গ করার জন্য বিধি মোতাবেক শাস্তি। কিন্তু তিনি এখন পর্যন্ত সেনাবাহিনীতে বহাল আছেন। কেবল তাই নয়, সাংবাদিকদের সাথে কথা বলছেন অনেকটা খোলামেলাভাবে। সেনাবাহিনীর অনেক স্পর্শকাতর ব্যাপার থাকছে তার এসব কথোপকথনের মধ্যে। বিখ্যাত মার্কিন সেনাপতি ম্যাক আর্থার ১৯৫২ সালে কোরিয়া যুদ্ধের সময় তখনকার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রুম্যানের সাথে ভিন্নমত পোষণ করেন।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট এ কারণে তাকে করেছিলেন পদচ্যুত। কিন্তু ভারতের প্রেসিডেন্ট ভি কে সিংকে পদচ্যুত করার কথা ভাবতে পারছেন না। মনে হচ্ছে ভি কে সিংয়ের বিরাট প্রভাব আছে সেনাবাহিনীর মধ্যে। ভারত সরকার তাই ভয় পাছে তার বিপ েকোনো ব্যবস্থা নিতে। তারা তাকে কেবল সরিয়ে দিতে চাচ্ছেন এ বছর মে মাসের ৩১ তারিখে। প্রস্তাব উঠেছে তার জায়গায় লেফটেন্যান্ট জেনারেল বিক্রম সিংকে ভারতের সেনাপ্রধান করতে। কিন্তু অনেকেই চাচ্ছেন না বিক্রম সিংকে সেনাপ্রধান করতে। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে দুর্নীতির। তার বিপ েআছেন ভারতের সাবেক নৌবাহিনীপ্রধান অ্যাডমিরাল এল এন রামদাস ও সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার এন গোপালস্বামী। তারা বিক্রম সিংয়ের নিয়োগ ঠেকাতে ভারতের সুপ্রিম কোর্টে মামলা করেছেন।
কঙ্গোয় জাতিসঙ্ঘ শান্তি মিশনে থাকার সময়ও তার বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি অভিযোগ ছিল বলে উলেস্নখ করা হয়। তিনি কঙ্গোতে যান জাতিসঙ্ঘের ভারতীয় শান্তিবাহিনীর সেনাপরিচালক হিসেবে। এসব থেকে মনে হচ্ছে, ভারতের সেনাবাহিনীর মধ্যে শুরম্ন হয়েছে মতার লড়াই। এর পরিণতি শেষ পর্যন্ত কী দাঁড়াবে তা বলা যাচ্ছে না। বর্তমান সেনাপ্রধান ভি কে সিং ভারতের প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংকে বলেছেন, ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা RAW (Research and Analysis Wing) একটি গোপন বাহিনী পরিচালনা করছে ভারতের অরুণাচল প্রদেশে। এই বাহিনীর ওপর ভারতের মূল সেনাবাহিনীর কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই। এর কাজ হলো তিব্বতে যারা চীনের বিরুদ্ধে গেরিলা যুদ্ধে নিযুক্ত তাদের সাহায্য করা। ভারতের সেনাবাহিনীতে তাই সৃষ্টি হচ্ছে পরিচালনা সঙ্কট। এদের কার্যকলাপে চীন-ভারত যুদ্ধ বাধলে ভারতীয় সৈন্য পড়তে পারে বিশেষ বিপাকে।
অরুণাচলে চীন এখনো ভারতের সার্বভৌমত্ব মানতে চাচ্ছে না। চীন বলছে, ভারতের অরুণাচলে প্রায় ৭৬ হাজার ৮০০ বর্গকিলোমিটার জায়গা ভারত দখল করে রেখেছে। ভারতের উচিত হবে আলোচনার মাধ্যমে এই জায়গা সম্পর্কে সমঝোতায় আসা। এই জায়গা নিয়ে এবং লাদাখের কিছু এলাকা নিয়ে ১৯৬২ সালের সেপ্টেম্বর মাসে বাধে চীন-ভারত যুদ্ধ; যা শেষ হয় ওই বছর নভেম্বর মাসে। এই যুদ্ধে ভারত হেরে যায় শোচনীয়ভাবে। কিন্তু ভারত-চীন এখন পর্যন্ত এই এলাকা কে কতটুকু নিয়ন্ত্রণ করবে তা নিয়ে কোনো সমঝোতায় আসতে পারেনি। এলাকাটি হয়ে আছে বিশেষভাবে বিরোধপূর্ণ। এই এলাকায় তাই ভারতের সেনাবাহিনীকে না জানিয়ে RAW যে তৎপরতা চালাচ্ছে, সেটা ভারতীয় সেনাবাহিনী সমর্থন করতে পারে না। ভি কে সিংয়ের এই বক্তব্য ভারতে সৃষ্টি করেছে বিশেষ চাঞ্চল্য।
মনে হচ্ছে ভারতের প্রতিরাব্যবস্থা হয়ে পড়তে চাচ্ছে ভেতর থেকেই দুর্বল। কারণ সেনাবাহিনীর অন্যতম প্রধান কথা হচ্ছে, শৃঙ্খলা। কোনো বিশৃঙ্খল সেনাবাহিনী কোনো যুদ্ধেই জয়ী হতে পারে না। ভারতের প্রতিরাব্যবস্থা ভারতের নাগরিকদের চিন্তার বিষয়। তবে বাংলাদেশের উচিত হবে এ েত্ের ভারতের ঘটনাপ্রবাহের ওপর সজাগ দৃষ্টি রাখা। বাংলাদেশের বর্তমান সরকার হয়ে উঠেছে খুবই ভারতপ্রেমী। ভারতের গোলযোগে অনেক সহজেই তাই জড়িয়ে পড়তে পারে বাংলাদেশ। বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্র ও ভারত একই অ েঅবস্থান করছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র একটি গণতন্ত্রী দেশ। কিন্তু সে ল্যাটিন আমেরিকার বিভিন্ন দেশকে আপন নিয়ন্ত্রণে রাখার ল্যে ওইসব দেশে সমর্থন দিয়ে এসেছে সেনাশাসকদের। ভারতের েত্ের যে ঠিক কী নীতি অনুসরণ করবে তা বলা যাচ্ছে না। সাবেক পাকিস্তানে ১৯৫৮ সালে জেনারেল আইয়ুব খানকে মতায় আসতে সহায়তা করেছিল যুক্তরাষ্ট্র তার আপন স্বার্থের কথা বিবেচনা করে। ভারতের কোনো সেনাপ্রধান আগামীতে একইভাবে, একই রকম কারণে পেতে পারেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষ বিবেচনা।
লেখক : প্রবীণ শিৰাবিদ, কলামিস্ট
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন